পর্যটকদের আগ্রহ থাকলেও মিলছে না কর্তৃপক্ষের অনুমতি

খুলছে না আলীবান্দা ইকোট্যুরিজম পর্যটন কেন্দ্র

শরণখোলা প্রতিনিধি

প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে এক বছরেরও বেশি আগে। অথচ বন কর্মকর্তাদের গাফিলতিতে এখনো চালু হয়নি পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের আলীবান্দা ইকোট্যুরিজম পর্যটন কেন্দ্র।

এদিকে, আজ থেকে জেলেরা নিষেধাজ্ঞা শেষে মাছ শিকারে ঢুকবে সুন্দবনে। একইসাথে সুন্দরবনে পর্যটকদের ভ্রমণ মৌসুম শুরু হচ্ছে আজ। আগ্রহ থাকলেও পর্যটকরা আলীবান্দা যেতে পারছেন না। ফলে বিপুল রাজস্ব হারাতে হচ্ছে বনবিভাগকে।

সরেজমিন আলীবান্ধা ইকোট্যুরিজম পর্যটন কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, পর্যটকদের সুন্দরবনের নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখার জন্য শরণখোলা রেঞ্জের আলীবান্দা ইকোট্যুরিজম পর্যটন কেন্দ্রে নির্মাণ করা হয়েছে ৫০ফুট উচ্চতার ওয়াচ টাওয়ার। নির্মাণ করা হয়েছে হেঁটে বন দেখার জন্য এক কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ফুটট্রেইল। এছাড়া আলীবান্দায় নির্মাণ করা হয়েছে পর্যটকদের জন্য পাবলিক টয়লেট, গোল ঘর, স্যুভেনির শপ, টিকেট কাউন্টার, ঢালাই জেটি, পাকা রাস্তা, কাটা হয়েছে ঘাট বাঁধানো দুটি পুকুর, হরিণ রাখার জন্য করা হয়েছে লোহার বেষ্টনী ও সেড। এক বছরেরও বেশী সময় আগে প্রকল্পের কাজ শেষ হলেও পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হচ্ছেনা আলীবান্দা। প্রতিদিন অনেক পর্যটক আলীবান্দা যেতে চাইলেও তাদের যেতে দেওয়া হচ্ছেনা।

বনবিভাগের শরণখোলা রেঞ্জ সদর ও শরণখোলা বাজার থেকে নদীপথে ট্রলারে আলীবান্দা যেতে সময় লাগে ৫০ মিনিট। লোকালয়ের এতো কাছাকাছি আলীবান্দায় ইকোট্যুরিজম পর্যটন কেন্দ্র গড়ে ওঠায় দিন দিন পর্যটকদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাড়িয়েছে আলীবান্দা।

বনবিভাগ সূত্রে জানা যায়, অদূর ভবিষ্যতে সুন্দরবনের গহীনের পর্যটনস্পট কটকা, কচিখালী, হিরণপয়েন্ট, দুবলারচরসহ অন্যান্য পর্যটনস্পটে পর্যটকদের যাওয়া নিরুৎসাহিত করতে বনবিভাগ লোকালয়ের কাছাকাছি সুন্দরবনে ইকোট্যুরিজম পর্যটন কেন্দ্র চালু করার প্রকল্প গ্রহণ করে। চার বছর মেয়াদি এ প্রকল্পের আওতায় পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের আলীবান্দা, চাঁদপাই রেঞ্জের, ধানসাগর, হাড়বাড়িয়া ও আন্ধারমানিক নামক স্থানে ইকোট্যুরিজম পর্যটন কেন্দ্র করার কাজ শুরু করা হয়। ইতিমধ্যে হাড়বাড়িয়া ও আন্ধারমানিক ইকোট্যুরিজম পর্যটন কেন্দ্র দুটি পুরোদমে চালু করা হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বনবিভাগের একটি সূত্র জানায়, আলীবান্দা প্রকল্পের বেশির ভাগ কাজ শেষ হলেও বন কর্মকর্তাদের গাফিলতিতে স্টাফ ব্যারাক না হওয়ায় আলীবান্দা এতোদিনে চালু হয়নি। প্রকল্পের ডিজাইনে স্টাফ ব্যারাক না থাকায় তা নির্মাণ করা হয়নি। প্রতিনিয়ত অনেক পর্যটক আসেন কিন্তু তাদের আলীবান্দা যেতে দেওয়া হয় না। তাছাড়া বেষ্টনীতে হরিণ না ছাড়ায় কেউ কেউ আলীবান্দা যেতে নিরুৎসাহিত হচ্ছেন যে কারণে বনবিভাগ বিপুল অঙ্কের রাজস্ব হারাচ্ছেন বলে ঐ সূত্র জানান।

সুন্দরবনের স্থানীয় ট্যুর অপারেটর শরণখোলার রাসেল আহমেদ বলেন, অপার সম্ভাবনার আলীবান্দা ইকোট্যুরিজম পর্যটন কেন্দ্র চালু হলে এখানে পর্যটকের ঢল নামবে। ঢাকাসহ অন্যান্য এলাকার পর্যটকেরা অতি অল্প সময়ে কম খরচে সুন্দরবনের এই এলাকা ভ্রমণ করে যেতে পারবে বলে তিনি জানান।

পূর্ব সুন্দরবন বন বিভাগ বাগেরহাটের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মোঃ রেজাউল করীম চৌধুরি বলেন, আলীবান্দায় ইকোট্যুরিজম পর্যটন কেন্দ্রের কাজ এখন শেষ পর্যায়ে। ইতোমধ্যে সেখানে বনরক্ষীদের থাকার জন্য স্টাফ ব্যারাক নির্মাণ করে বনরক্ষী পোস্টিং দেওয়া হয়েছে। এখন নির্মিত বেষ্টনীতে হরিণ ও পুকুরে কুমির ছাড়ার প্রস্তুতি চলছে। শীঘ্রই আলীবান্দা ইকোট্যুরিজম পর্যটন কেন্দ্র পর্যটকদের জন্য পুরোপুরি খুলে দেওয়া যাবে বলে ডিএফও জানিয়েছেন।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন